পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০২৩ সালে নিজের প্রেমিকের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা শ্রদ্ধা ওয়াকার। দেহ কুচি কুচি করে কেটে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছিল তার প্রেমিক। হাড়হিম করা খুনের ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। একবছর পর গোয়ায় নিজের শিশুপুত্রকে খুন করে লাশ বাক্সবন্দি করে পালানোর সময় ধরা পড়ল তা মা সূচনা শেঠ। দুটি ঘটনার মধ্যে খুন ছাড়া কোনও মিল না থাকলেও ঘটনাগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সমাজের অবক্ষয়। একটি ঘটনায় ভালোবাসার অপমান, অন্যটিতে মায়ের মমতার মৃত্যু।
সূচনা শেঠের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত খুনের কিনারা হয়নি।
পুলিশ সূচনার ব্যাগ থেকে একটি চিরকূট পেয়েছে। যেখানে লেখা আছে, ‘ ছেলের কাছে স্বামীকে আসতে দেব না’। ১০টি পয়েন্ট সামনে এসেছে, যা ভাবিয়ে তুলছে পুলিশকে। সূচনা এখনও পর্যন্ত খুনের কথা স্বীকার করেনি। অভিযুক্তের বক্তব্য, ঘুম থেকে ওঠার পর, সে মৃত অবস্থায় পায় তার সন্তানকে। এখানে পুলিশের প্রশ্ন, কেন তাহলে ডাক্তার না ডেকে সে রাতের অন্ধকারে ক্যাব ধরে পালাতে চেয়েছিল? সন্তানের যদি স্বাভাবিক মৃত্যু হবে, তাহলে সে নিজের হাতে শিরা কেনো কাটতে চেয়েছিল? তাহলে কি সন্তানকে খুন করে অনুশোচনা, নাকি পুলিশের ভয়ে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল? ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে শ্বাসরোধের কারণেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। এখনও পর্যন্ত পুলিশের হাতে যে তথ্য তা হল প্রাক্তন স্বামী পি আর ভেঙ্কট রমনের সঙ্গে তার তিক্ততার সম্পর্কই এই হত্যার পিছনে আসল রহস্য।
সূচনার বিবাহ বিচ্ছেদের পরে, আদালত ভেঙ্কটকে সপ্তাহে রবিবার একদিন করে দেখা করার অনুমতি দেয়, আদেশ মানতে পারেনি সূচনা। ৬ জানুয়ারি প্রাক্তন স্বামী ভেঙ্কটকে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে আসতে বলে নিজেই ছেলেকে নিয়ে গোয়ায় চলে আসে। ওই দিনই গোয়ায় সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বুক করে সূচনা। আচমকা ৭ জানুয়ারি কাজ আছে বলে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে মধ্যরাতে বিমানে না গিয়ে ৩০ হাজার টাকায় ক্যাব ভাড়া করে বেঙ্গালুরু আসার। তাহলে কি হঠাৎ খুনের পরিকল্পনা? পুরনো একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় সূচনা বলেছিল, ছেলের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তা নিয়ে সে উদ্বিগ্ন থাকে।
শুক্রবার সূচনাকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পূনর্নির্মাণ করে পুলিশ, কিন্তু রাজি ছিল না সূচনা। পরে যেতে রাজি হয় সে। একঘণ্টা ধরে পূনর্নির্মাণ হয়।