পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: হিন্দু ধর্মশাস্ত্র ভগবত গীতা নিয়ে একটি সার্টিফিকেট কোর্স চালু হয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রামানুজন কলেজে। আর সেই কোর্সে রেজিস্ট্রেশন ও উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর তা নিয়েই তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছে শিক্ষকদের সংগঠন—‘ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ফ্রন্ট’। তাদের দাবি, অবিলম্বে এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করতে হবে।
বুধবার এক বিবৃতিতে শিক্ষকদের সংগঠনটি বলেছে, কলেজের শিক্ষক ও অ-শিক্ষক কর্মচারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভগবত গীতার উপর এই সার্টিফিকেট কোর্সের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। শিক্ষক সংগঠন মনে করে, কলেজ কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ স্বৈরাচারী মনোভাব ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি কলেজ প্রশাসনের স্বৈরাচারী মনোভাবকে ফুটিয়ে তোলে। শিক্ষক সংগঠনের আরও অভিযোগ, কলেজের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের তাদের অফিস টাইমের পরও এই কোর্সে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
যদিও এই প্রসঙ্গে রামানুজন কলেজের প্রিন্সিপাল এস পি আগরওয়ালকে ফোন করে, মেসেজ পাঠিয়েও কোনও জবাব মেলেনি। শিক্ষক সংগঠনটির বিবৃতিতেতে আরও বলা হয়েছে, রামানুজন কলেজের প্রিন্সিপাল কলেজের সমস্ত শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের এই কোর্সে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কলেজের নির্ধারিত অফিস টাইমের পরও বাড়তি সময় হিসেবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের আটকে রাখা হচ্ছে এই কোর্সের জন্য।
এমনিতেই শিক্ষার্থীদের চলমান সেমেস্টার পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে শিক্ষকদের উপর। তারপর এই ধরনের একটি ‘অগ্রহণযোগ্য বোঝা’ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোর্সটির জন্য বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও সমস্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীকে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কলেজ শিক্ষক ও কর্মীদের একটি ই-মেলে অধ্যক্ষ জানিয়ে ছিলেন, কলেজে স্থাপন করার প্রস্তাবিত ভারতীয় জ্ঞান ও ধারণার সাথে সঙ্গতি রেখে কোর্সটি সাজানো হয়েছে। এই কোর্সটি কলেজের ‘ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম সেন্টার’ স্থাপনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এই ধরনের প্রোগ্রামগুলির মাধ্যমে নিজেদের আরও সংবেদনশীল করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। সেখানে আরও বলা হয়েছে, কলেজে শুধুমাত্র ভগবত গীতা নিয়ে নয়, বেদ নিয়েও এই ধরনের কোর্স চালু করবে। আর এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, মোদি সরকার শিক্ষায় গেরুয়াকরণ করে চলেছে। স্কুল-কলেজের সিলেবাস পাল্টে ফেলা হচ্ছে। ইতিহাস বদলে দেওয়া হচ্ছে। মুঘল ইতিহাস মুছে দেওয়া হচ্ছে। তারপর কলেজে কলেজে ভগবত গীতার উপর এই ধরনের কোর্স চালু করা কেন্দ্রের গৈরিকীরণেরই একটা অংশ।