পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: যক্ষ্মা চিকিৎসায় বড়সড় সাফল্য পেল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি)। কিভাবে যক্ষ্মা নির্মূল হয়ে যাওয়ার পরেও এই রোগের জীবাণু মানবদেহে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে বেঁচে থাকে, সেটিই এই গবেষণার মূল আবিষ্কার। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস (এনসিবিএস) এবং ইনস্টিটিউট ফর স্টেম সেল সায়েন্স অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন (ইনস্টেম) এর সহযোগিতায় আইআইএসসি -এর বিজ্ঞানীরা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি যুগান্তকারি আবিষ্কারের তথ্য সামনে আনলেন। গবেষকরা একটি জিন সনাক্ত করেছেন, যা মানব হোস্টের মধ্যে মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস (এমটিবি) বেঁচে থাকার এবং টিকে থাকার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আবিষ্কার সায়েন্স অ্যাডভান্সে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার যক্ষ্মা নিমূর্লে একটি নতুন দিক খুলে দিতে পারে। বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস (এনসিবিএস) এবং ইনস্টিটিউট ফর স্টেম সেল সায়েন্স অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন (ইনস্টেম) এর একদল গবেষক এই নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা চালিয়েছেন।
মাইক্রোবাইলজি ও সেল বায়োলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক অমিত সিংয়ের নেতৃত্বে গবেষকদল এমটিবি কীভাবে দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরে সুপ্ত থাকতে পারে তা সেই নিয়ে গবেষণা চালান। রোগটি কোনও লক্ষণ ছাড়াই মানব দেহে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে। সব থেকে বড় কথা হল এটির কোনও ধরনের লক্ষণ শরীরের বাইরে থেকে প্রকাশিত হয় না। হঠাৎ করেই এই জীবাণু জেগে উঠতে পারে, আর তখনই কোনও ব্যক্তি ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি) এর পিএইডি ছাত্রী মায়াশ্রী দাস বলেছেন, ‘মাইকোব্যাকটেরিয়াম যক্ষ্মা রোগের জীবাণুটি বেঁচে থাকার জন্য একটি মানব দেহের প্রয়োজন। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা এই জীবাণুটিকে শনাক্ত করে নির্মূল করতে সক্ষম। কিন্তু এই জীবাণুটি নিজেকে এতটাই শক্তিশালী করে তুলেছে যে, সেটি মানব শরীরের ফুসফুসে থাবা বসিয়ে সেখানে নিজেদের লুকিয়ে রাখতে সক্ষম। বলা যায়, এই জীবাণুটি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আক্রান্তের শরীরেই নিজের জন্য একটি প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে। যেখানে টিবি বা যক্ষ্মা নির্মূলে ওষুধ কাজ করে না।
অধ্যাপক অমিত সিং জানিয়েছেন, এই জীবাণুটির বিষয় খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। লুকিয়ে থাকা জীবাণুটি মানবদেহে যে কোনও সময় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, এর কারণে সেই ব্যক্তি ফের অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
অধ্যাপক অমিত সিং আশাবাদি যে, তাদের এই গবেষণা আগামীদিনে যক্ষ্মা নির্মূলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নয়া দিশা দেখাতে সাহায্য করবে।