পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: শত বছরের প্রথা ভেঙে উচ্চবর্ণ প্রভাবিতদের রাস্তায় জুতো পরে হাঁটল ৬০ দলিত। তামিলনাডুর তিরুপ্পুর জেলার মাদাথুকুলাম তালুকের রাজাভুর গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দায় দলিত। কিন্তু তাদেরই গ্রামের রাস্তা কাম্বালা নেইকেন স্ট্রিট দিয়ে জুতো পরে হাঁটার অনুমতি ছিল না তাদের। ওই রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালানোর অনুমতিও ছিল না তাদের। স্থানীয় উচ্চবর্ণের বাসিন্দারা এই অলিখিত নিয়ম চাপিয়ে দিয়েছিল দলিতদের উপর। স্বাধীনতার পর যখন আইন এনে অস্পৃশ্যতা বন্ধ করে দেওযা হয় গোটা দেশে, তখন এই গ্রামের উচ্চবর্ণরা দলিতদের দমিয়ে রাখতে নতুন পথ অবলম্বন করে।
তারা ঘোষণা দেয়, ওই রাস্তার নিচে একটি পুতুলকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। কোনও দলিত ওই রাস্তা দিয়ে জুতো পরে হাঁটলে তিন মাসের মধ্যে সে মারা যাবে। এমনকি উচ্চবর্ণের মহিলারাও গল্প ফাঁদেন। তারা বলেন, ওই রাস্তা দিয়ে কোনও দলিত হেঁটে গেলে স্থানীয় এক দেবতার অভিশাপে তাদের মৃত্যু হবে। ভয়ে দলিতরা খালি পায়ে হাঁটত ওই রাস্তা দিয়ে। আর যারা বুঝত এই সব গল্প তাদেরকে দমন করার জন্য বোনা হয়েছে, তারা প্রতিবাদ জানিয়ে জুতো পরে হাঁটার কথা বললে, তাদেরকে শাসানো হত। মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হত।
সম্প্রতি দলিতদের একটি সংগঠনে অভিযোগ জানায় কয়েকজন গ্রামবাসী। এরপরই কয়েকটি সংগঠন মিলে যৌথভাবে এই সমস্যার সমাধান খোঁজা শুরু করে। পুলিশেও অভিযোগ জানানো হয়। শেষ পর্ষন্ত ওই রাস্তা দিয়ে ৬০ জন দলিত হেঁটে গিয়ে শতবর্ষের অলিখিত প্রথা ভেঙে টুকরো করেন। এদিন স্থানীয় একটি মন্দিরেও তারা ঢোকেন। সেখানেও এতদিন দলিতরা প্রবেশাধিকার পেত না।
তামিলনাডু আনটাচবিলিটি ইরাডিকেশন ফ্রন্ট (তিরুপ্পুর) এর সেক্রেটারি সি কে কানাগারাজ বলেন, রবিবার ওই রাস্তা দোয়ে জুতো পরে হেঁটে আমরা দীর্ধদিনের অনাচার বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। গোটা ঘটনার সাক্ষী ছিল স্থানীয় পুলিশ। আশা করি সেখানকার দলিতদের মনোবল বাড়বে। এখনও অনেকে ভয় পাচ্ছেন, যে এই প্রতিবাদের মাশুল গুনতে হবে তাদেরকে।