পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ৯ দিন পার। এখনও ভেঙে পড়া টানলেই আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ৯ দিন কেটে যাওয়ার পর অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিকে ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মুখ্যমন্ত্রীকে মোদির পরামর্শ, শ্রমিকদের মনোবল যাতে কোনও ভাবেই ভেঙে না যায়। তিনি বলেন রাজ্য ও কেন্দ্র একসঙ্গে মিলে শীঘ্রই শ্রমিকদের উদ্ধার করবে। কিন্তু কবে? মেলেনি সে উত্তর। সোমবার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গিয়েছে আটকে পড়া শ্রমিকদের অক্সিজেন ও খাবার পাঠানো হচ্ছে পাইপের মাধ্যমে। দিনভর উদ্ধারের কাজে বিশাল বিশাল কংক্রিটের ব্লক, বিরাট যন্ত্র আসছে। এবার অভিযানে জুড়লেন ইন্টারন্যাশনাল টানেলিং আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেসের প্রফেসর আর্নল্ড ডিক্স। সোমবার উত্তরাখণ্ড পৌঁছন তিনি।
গত রবিবার নির্মীয়মাণ টানেলটি ভেঙে পড়ার পরেই শুরু হয়েছিল উদ্ধারকাজ। শুধু দেশি নয়, বিদেশি উদ্ধারকারী সংস্থাও হাত লাগিয়েছে কাজে। ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে পাইপ ঢুকিয়ে চলছিল অক্সিজেন পাঠানো। পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল খাবার এবং জলও। ৪টি পাইপ ইতিমধ্যেই ঢোকানো হয়ে গিয়েছিল। মাঝে ধস নেমে ব্যাহত হয়েছে উদ্ধারকাজ। তারপর ড্রিল করে পঞ্চম পাইপটি ঢোকানোর চেষ্টা করতেই শুক্রবার বিকেলে ফাটল ধরার বিকট শব্দ কানে আসে। বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। এই পরিস্থিতিতে আটক শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য ৫টি বিকল্প পরিকল্পনার কথা ভাবা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের রোড ট্রান্সপোর্ট এবং হাইওয়ে সেক্রেটারি ঔরঙ্গ জৈন জানিয়েছেন, শ্রমিকদের নিরাপদে বের করে আনার জন্য পাঁচটি বিকল্প সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পাঁচটি ভিন্ন সংস্থাকে এই বিকল্পগুলি সম্পাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন, শতদ্রু জল বিদ্যুৎ নিগম, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড, এবং তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড নামে পাঁচটি সংস্থা ৫ রকম বিকল্প ব্যবস্থার দায়িত্বে আছে। বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্মাণ শাখাও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে।
রবিবার উত্তরকাশীতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী নিতিন গড়করি। তিনি বলেন, ‘আমরা সফল হবই। প্রধানমন্ত্রীও এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। রাজ্য সরকার আমাদের সাহায্য করছে। ভারত সরকারের একাধিক এজেন্সি কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদলেরও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল, শ্রমিকদের অক্ষত অবস্থায় বের করে আনা। ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল ও অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছে। এবার রুটি, সবজি ও অন্যান্য সামগ্রীও পাঠাচ্ছি। ৪২ মিটার এগিয়ে গিয়েছি আমরা। খুব শীঘ্রই আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে যাবো।’
অন্ধ সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিকের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিনজন রয়েছেন। এই তিনজন হলেন কোচবিহারের তুফানগঞ্জের ১ ব্লকের চেকাডেরা গ্রামের মানিক তালুকদার, হুগলির পুরশুড়ার নিমডাঙির জয়দেব পরামানিক ও পুরশুড়ার হরিণাখালির সৌভিক পাখিরা।