গাজা, ১৪ মার্চ: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের যায়নবাদী সেনা। গত দুই সপ্তাহে এ ধরনের ইসরাইলি হামলায় ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রমযানের দ্বিতীয় দিনে ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছে দখলদাররা। গত সপ্তাহে গাজা শহরের আল-রাশিদ স্ট্রিটে একটি ত্রাণবাহী গাড়ি থামতে দেখে সেখানে জড়ো হতে থাকে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষ। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু। সেখানেও ট্যাঙ্ক নিয়ে হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। ওই এক হামলাতেই প্রাণ হারায় শতাধিক ফিলিস্তিনি। গাজার সরকারি মিডিয়া কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলি সেনাদের হাতে ৪০০ জনেরও বেশি ত্রাণপ্রার্থী মানুষ মারা গেছে গত দুই সপ্তাহে। রাষ্ট্রসংঘের হিসেব বলছে, গত ৭ অক্টোবর আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় এখনও পর্যন্ত ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। লাগাতার ইসরাইলি হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির ৮০ শতাংশই এখন বসবাসের অযোগ্য। গাজায় অনাহারে ভুগছেন প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ। এদিকে, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বন্দরের বিভিন্ন প্রবেশ পথ অবরোধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। উল্লেখ্য, পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। শুরু থেকেই মার্কিনিদের একাংশ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলি বর্বরতাকে একতরফাভাবে সমর্থন দিলেও হামলা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করে আসছেন মার্কিনিরা। তারই অংশ হিসেবে সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানান শত শত মানুষ। ব্যস্ততম সানফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে ঢুকে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ করেন মার্কিনিরা। এ সময় বন্দরের বিভিন্ন প্রবেশ পথ অবরোধ করে রাখেন তারা। এতে কিছুক্ষণের জন্য বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। ইসরাইলকে সামরিক সহায়তা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীরা বলেন, মার্কিন সরকারের সমর্থনের কারণেই গাজায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইসরাইল।