কিবরিয়া আনসারী: ২৬ হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি বাতিলের রায়কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্টের রায়কে নিয়ে সমালোচনাও করলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, “এটা বেআইনি। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আমরা শীর্ষ আদালতে যাচ্ছি।”
রায়গঞ্জের নির্বাচনী সভা থেকে কটাক্ষের সুরে মমতা বলেন, ‘‘বলছে বোমা ফাটাবে। বোমা কী? ২৬ হাজার লোকের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। মানুষের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার নাম বোমা। কোর্ট কী রায় দেবে আগে জানলি কী ভাবে? সোমবার রায় দেবে, শনিবার জানলি কী ভাবে? যদি রায় নিজেরা লিখে না দিস?’’ এরপরই চাকরি হারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না, জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আমরা আপনাদের পাশে রয়েছি। এরজন্য যতদূর যেতে হয় যাবো। আমরা লড়াই করবো।”
সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের প্রাপ্ত বেতনের ১২ শতাংশ সুদ সহ ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে হবে। এপ্রসঙ্গে মমতার সাফ বক্তব্য, “২৬ হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি যাওয়া মানে প্রায় দেড় লক্ষ পরিবার অসহায় হয়ে যাওয়া। ৮ বছর ধরে তারা চাকরি করেছে, চার সপ্তাহের মধ্যে সব টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়েছে। এটা কি সম্ভব?” আমি বিচারপতিদের নিয়ে মন্তব্য করব না, কিন্তু রায় নিয়ে আমার বলার অধিকার আছে বলেই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এক ধাক্কায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৬ সালের এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে হাইকোর্ট। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরের কোনও চাকরির বৈধতা নেই। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, প্রাপ্ত বেতনের ১২ শতাংশ সুদ সহ ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে হবে। এই বেতন ফেরত প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতিসহ মামলাগুলির তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে তদন্তকারী আধিকারিকরা অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে। এসএসসি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সমস্ত ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে সেগুলি। তার ভিত্তিতে তৈরি করতে হবে নতুন প্যানেল।