পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। শৈশব হারিয়ে ফেলেছে ওরা। জানে না সেইদিনগুলি আবার ফিরে আসবে কিনা। চারদিকে গুলি-গোলার শব্দ আর বারুদের গন্ধেই দিন শুরু আর দিন শেষ হয় ওদের। ওরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শিশুদের অবস্থা বর্ণনা করার মতো নয়। বড়রা পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝলেই ওরা বোঝে না কিছুই। চারিদিকে যন্ত্রণা আর মৃত্যুর চিহ্ন ওদের বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুণ। ইসরাইলের টানা প্রায় চার মাসের নির্বিচার হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার প্রায় সব শিশুরই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
রাষ্ট্রসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থাটি জানায়, চলমান লড়াইয়ে গাজায় অন্ততপক্ষে ১৭ হাজার শিশু মা-বাবা হারিয়ে একা কিংবা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত পর্যায়ে নেমে এসেছে। গাজায় ইউনিসেফের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোনাথন ক্রিকস বলেন, ‘গাজার প্রতিটি শিশুর একটি কষ্টের গল্প আছে।’ জেরুজালেম থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ইসরাইলের চলমান হামলা গাজার শিশুদের মনের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে।
উপত্যকাটির ১০ লক্ষ শিশুর এখন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা প্রয়োজন। গাজার শিশুদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় অবিরাম উদ্বেগের বোধ, খিদে নষ্ট হয়ে যাওয়া, নিদ্রাহীনতা, বোমার শব্দ শুনলেই আতঙ্কে কেঁদে ওঠা, মাঝেমধ্যে প্রচণ্ডভাবে খেপে যাওয়াসহ নানা ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। একলা হয়ে পড়া শিশুদের পরিবারের সদস্যদের সন্ধান করা অত্যন্ত কঠিন। যেমন—প্রায়ই অনেক শিশুকে আহত কিংবা ভয়ার্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অনেকে তখন নিজের নামটুকুও বলতে পারে না। ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধের মধ্যে মা-বাবা হারা শিশুদের দেখভাল করে সাধারণত আত্মীয়-স্বজনরা। তবে গাজায় খাদ্য, জল, মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে এই শিশুদের আত্মীয়-স্বজনরাও তীব্র চাপ ও হতাশার শিকার।