পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ‘পাসওয়ার্ড’ এর ক্ষেত্রে এক নিয়ম, ‘পাস’ এর ক্ষেত্রে আর এক। এমন কেন হবে? লগ ইন, পাসওয়ার্ড শেয়ার করার জন্য নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে রেখে যদি সাসপেন্ড করা হয় তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রকে তাহলে একই সাজা কেন হবে না বিজেপি সাংসদ প্রতাম সিমহার? যার দেওয়া পাস নিয়েই সংসদে ঢুকে বুধবার স্মোক ক্যান ফাটিয়েছে দুই ব্যক্তি। এতজন সাংসদের নিরাপত্তা দিতে অপারগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কেন পদত্যাগ করবেন না? এই প্রশ্নে বৃহস্পতিবার সরব হয়েছিল বিরোধী সাংসদরা। দুই কক্ষের ওয়েলে নেমে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিন। এটাই ছিল তাদের ‘দোষ’। আর সেই কারণে একদিনে ১৫ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল। লোকসভায় ১৪ জন ও রাজ্যসভায় ১ জনকে সাসপেন্ড করা হয় এদিন। চলতি অধিবেশনে তারা আর সংসদ ভবনে ঢুকতে পারবেন না। ন্যায্য কারণে পদত্যাগের দাবি করা হলে কেন সাসপেন্ড করা হবে? এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্যসভায় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সাসপেন্ড করে দেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনকে।
ধনখড়ের সঙ্গে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয় ডেরেকের। রাজ্যসভায় যে সাংসদরা বিজেপির বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি সরব হয় তাদের মধ্যে একজন ডেরেক। এদিন অন্যান্যরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখালেও রাজ্যসভায় একমাত্র ডেরেককেই সাসপেন্ড করেন ধনখড়। বিরোধী এবং সরব সাংসদদের সাসপেন্ড করা অবশ্য মোদি জমানায় নতুন ঘটনা নয়।
এদিন অমিত শাহর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয় সংসদ যার জেরে দফায় দফায় মুলতুবি হয় অধিবেশন। দুপুর দুটোর পর সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী কংগ্রেসের ৫ সাংসদকে সাসপেন্ডের প্রস্তাব দেন। স্পিকার তাতে ভোটাভুটির অনুমতিও দিয়ে দেন। ফলে সাসপেন্ড হন ৫ সাংসদ। আবার মুলতুবির পর যখন নতুন করে অধিবেশন শুরু হয়, তখন ফের ৯ সাংসদকে সাসপেন্ডের সুপারিশ করেন সংসদীয় মন্ত্রী। তার ইচ্ছেমত আবারও ৯ সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়।
যাদের এদিন সাসপেন্ড করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন – টিএন প্রাথাপন, হিবি ইডেন, যোথিমানি, রাম্য হরিদাস, ডিন কুরিয়াকোস, ভিকে শ্রীকানদন, বেন্নি বেহানন, মহম্মদ জাহেদ, মনিক্কাম টেগোর, পিআর নটরাজন, এস ভেঙ্কটেশন, কানিমোঝি, এস পার্থিবন, সুব্বারায়ন ও রাজ্যসভা থেকে ডেরেক ও ব্রায়েন।
উল্লেখ্য, যেকোনও দেশের সংসদ ভবন সেদেশের নিরাপদতম স্থান। ঘটা করে ৯০০ কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ করিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বলা হয়েছিল, নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রমাণ বলছে উল্টো কথা। বুধবারের স্মোক ক্যানের ঘটনা সাংসদদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ন্যায়সংগত বিষয়ে বিক্ষোভ দেখালে কেন এভাবে ১৫ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হবে, এই প্রশ্নের জবাব পাচ্ছেন না কেউই।